টেলিভিশন উপস্থাপক ও সাংবাদিক মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাবে ১৩৪ কোটি টাকার সন্দেহভাজন লেনদেনসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
অভিযোগ ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালানোর পর, মুন্নী সাহার আমানত থেকে ১২০ কোটি টাকার বেশি উত্তোলন করা হয়। বর্তমানে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মাত্র ১৪ কোটি টাকা স্থিতি রয়েছে। এই লেনদেন ১৭টি ব্যাংকের মাধ্যমে হয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওয়ান ব্যাংকের মাধ্যমে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ইতোমধ্যে মুন্নী সাহার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২ মে বেসরকারি ওয়ান ব্যাংকের কারওয়ানবাজার শাখায় মুন্নী সাহার স্বামী কবির হোসেনের মালিকানাধীন এমএস প্রমোশনের নামে একটি হিসাব খোলা হয়, যেখানে নমিনি হিসেবে মুন্নী সাহার নাম রয়েছে। এ ছাড়া, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখায় ২০০৪ সালের ২১ জুলাই প্রাইম ট্রেডার্স নামে আরেকটি হিসাব খোলা হয়েছিল। দুটি হিসাবের মধ্যে সন্দেহজনকভাবে বিপুল অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে প্রাইম ট্রেডার্সের ঋণ সুদ মওকুফ করা হয়েছিল ২৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার।
এছাড়া, মুন্নী সাহার গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোড এলাকায় শান্তিনিকেতনে এবং রোজাগ্রীণে দুটি ডুপ্লেক্স বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে।
মুন্নী সাহা সাংবাদিকতা জীবনের শুরু করেন ভোরের কাগজ দিয়ে এবং পরে একুশে টেলিভিশন ও এটিএন বাংলায় যোগ দেন। তিনি শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশসহ অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা উপস্থাপন করেছেন। এর পাশাপাশি, ২০১৯ সালে ছাত্র আন্দোলনকালে যাত্রাবাড়ী থানায় গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী নাঈম হাওলাদারের মামলায় মুন্নী সাহাও আসামি হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।